শাহিনুর ইসলাম প্রান্ত,লালমনিরহাট প্রতিনিধি
লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলায় শত্রুতার জেরে পুকুরে বিষ দিয়ে প্রায় ৩ লাখ টাকার মাছ মারার অভিযোগ উঠেছে।
বৃহস্পতিবার (১৮ জুলাই) দুপুরে ক্ষতিপুরনসহ শাস্তির দাবি করে আদিতমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে (ইউএনও) লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন ক্ষতিগ্রস্থ চাষি শফিকুল ইসলাম।
ক্ষতিগ্রস্থ মৎস চাষি শফিকুল ইসলাম উপজেলার পলাশী ইউনিয়নের মহিষাশ্বহর গ্রামের আব্দুল হামিদের ছেলে।
দায়ের করা অভিযোগ ও পুলিশ জানান, মৎস চাষি শফিকুল ইসলাম বাড়ির পাশে প্রায় ৫দোন জমির উপর একটা মৎস খামাড় গড়ে তুলেন। এ আয়ে চলে তার সংসারসহ ছেলে মেয়েদের লেখা পড়ার খরচ। এ পুকুর থেকে বছরে আয় করেন প্রায় ৪/৫ লাখ টাকা। পুকুরের আয়ে এক মেয়ের বিয়ে দেন মৎস চাষি শফিকুল ইসলাম।
মেয়ের বিয়ে দেয়া নিয়ে তার সাথে বিরোধ বাঁধে প্রতিবেশি সাইদুল ইসলামের ছেলে জাহাঙ্গীর আলমের। এ শত্রুতার জের প্রায় সময় শফিকুলকে অর্থিক ভাবে ঘায়েল করার হুমকী দিত জাহাঙ্গীর আলম। এরই জের ধরে বুধবার (১৭ জুলাই) রাতে ওই পুকুরে গ্যাস ট্যাবলেট (বিষ) ছিটিয়ে দেয় জাহাঙ্গীর। এ সময় স্থানীয় কয়েকজন দেখে ফেলেন এবং চিৎকার দিলে জাহাঙ্গীর পালিয়ে যায়।
পরে রাতেই পুকুরের মাছ মরতে থাকে এবং পানির দুর্গন্ধ উঠে। পানির দুর্গন্ধে পুরো এলাকার বাতাস দুষিত হয়ে উঠেছে। এমন অবস্থায় এলাকায় ডায়েরীয়া বা পানি ও বায়ু বাহিত রোগের প্রাদুর্ভাব ঘটার আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা। খবর পেয়ে রাতেই আদিতমারী থানা পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে ক্ষয়ক্ষতির পরিমান নিরুপন করেন। পুলিশ ঘটনাস্থলে আসার পর থেকে পুরো পরিবার পলাতক রয়েছে। পরে স্থানীয় জেলেদের সহায়তায় জাল দিয়ে প্রায় ৩০/৩৫ মন মরা মাছ তুলে মাটিতে পুতে ফেলেন।
এ ঘটনায় মৎস চাষি শফিকুল ইসলাম বাদি হয়ে প্রায় তিন লাখ টাকার ক্ষতিপুরনসহ অভিযুক্ত জাহাঙ্গীর আলমের শাস্তির দাবি করে আদিতমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাসহ মৎস বিভাগে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।
ক্ষতিগ্রস্থ মৎস চাষি শফিকুল ইসলাম বলেন, মাছ না মেরে আমাকে মেরে প্রতিশোধ নিলেও পরিবারের ছেলে মেয়েরা বেঁচে যেত। মাছ মেরে জাহাঙ্গীর আমার পুরো পরিবারকেই মেরে ফেলেছে। এবার না খেয়ে মরতে হবে। তিনি ঘাতক জাহাঙ্গীরের কঠোর শাস্তি দাবি করেন।
ঘটনাস্থলে পলাশী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান শওকত আলী বলেন, পুকুরে বিষ দিয়ে মাছ নিধন করা উচিৎ হয়নি। মাছ চাষ করেই চলত শফিকুলের সংসার। অভিযুক্ত জাহাঙ্গীরের শাস্তি দাবি জানান তিনি।
আদিতমারী থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি তদন্ত) সাইফুল ইসলাম বলেন, খবর পেয়ে রাতেই ঘটনাস্থল তদন্ত করে ক্ষয়ক্ষতি নিরুপন করা হয়েছে। অভিযোগ পেয়েছি আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
ইনাম/সময়নিউজবিডি টুয়েন্টিফোর।
Leave a Reply